বাংলাদেশ সরকারকে ট্যাক্সও দেবে ফেসবুক

অনলাইন ডেস্ক – ঢাকা সফররত ফেসবুকের আট সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সোমবার বৈঠক করেন৷ মন্ত্রীর সঙ্গে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা ছিলেন৷ বৈঠকে কী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের বিভিন্ন তথ্য ও প্রশ্নের জবাব দিতে ফেসবুক তার রেসপন্স টাইম কমিয়ে আনবে৷ এজন্য তাদের প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ ও কারিগরি উন্নয়ন ঘটাবে৷ তারা বাংলাদেশে একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করতে যাচ্ছে৷’’

তিনি জানান, ‘‘হেট স্পিচ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থানের ব্যাপারে তারা আমাদের সহায়তা করবে৷ তারা বিষয়গুলো মনিটর করবে৷ শুধু বাংলা ভাষায় নয়, এমনকি রোমান হরফে বাংলা লিখলেও তারা তা মনিটর করতে পারে বলে আমাদের জানিয়েছে৷ এজন্য তারা যদি কোনো টেকনিক্যাল টিম তৈরি করতে চায় তাহলে আমরা তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি৷’’

ফেসবুক, গুগগলসহ আরো যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আছে সেগুলোকে করের আওতায় আনছে জাতীয় রাজস্ববোর্ড (এনবিআর)৷ বৈঠকে এ বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে৷ মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘‘ফেসবুক বাংলাদেশের প্রাপ্য ট্যাক্স দিতে চায়৷ এখন সেটা কী প্রক্রিয়ায় দেয়া হবে বা আমরা কী প্রক্রিয়ায় নেবো সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে৷ সেজন্য ফেসবুক কনসালটেন্ট নিয়োগ করেছে৷ আর তারা বাংলাদেশের আইন-কানুন মেনেই এখানে ওদের অপারেশন চালাবে৷ এই প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছে৷’’

তারা চাহিদা অনুযায়ী সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেবা পেলেই হলো: মন্ত্রী

ফেসবুকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বা এখানকার নাগরিকদের আইনগত ব্যবস্থা স্থানীয় আইনে হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকার ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করলে সেটা বাংলাদেশের আইনে এখানকার আদালতেই হবে৷ মামলা হলে তাদের এখানকার আদালতেই হাজির হতে হবে৷ এটাই নিয়ম৷ তবে এটা তো আমাদের আগ বাড়িয়ে তাদের জানানোর দরকার নেই৷’’

বাংলাদেশে ফেসবুক অফিস খুলবে বলে শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত তারা অফিস খুলছে না৷ এখানে একজন স্থ্নাীয় প্রতিনিধি নিয়োগ করবে৷ ওই প্রতিনিধি বাংলাদেশ সরকারের সাথে ফেসবুকের যোগাযোগ রক্ষা করবেন৷ ফেসবুকের পলিসি কম্যুনিকেশন ম্যানেজার (এমার্জিং মার্কেট) অ্যামি সাওত্যিয়া লেফার্ভ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ফেসবুক বাংলাদেশে কোনো অফিস করছে না৷ এবং অদূর ভবিষ্যতে এর কোনো পরিকল্পনাও নেই৷ আমরা বিশ্বের অনেক দেশেই আমাদের কার্যক্রম চালাই, যেখানে আমাদের কোনো অফিস নেই৷ বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি৷ তবে বাংলাদেশে আমরা স্থানীয়ভাবে একজন পাবলিক পলিসি প্রতিনিধি নিয়োগ করছি৷’’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ডেডিকেটেড টিম আছে৷ তারা বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করেন৷ আঞ্চলিক অফিস আছে৷ তারাও বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করেন৷’’

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হয়েছে তা প্রকাশ করেননি ফেসবুকের এই প্রতিনিধি৷ এদিকে একজন মাত্র প্রতিনিধি ফেসবুকের অপারেশন বাংলাদেশে কিভাবে দেখবে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আমাদের চাহিদামতো সার্ভিস পেলেই হলো৷ তার অফিস খুললো না প্রতিনিধি নিয়োগ করলো সেটা আমাদের কাছে মূখ্য নয়৷ তারা আমাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷ আমরা সেবা পেলেই হলো৷’’ তিনি জানান, ভারতে ফেসবুকের অফিস আছে, কিন্তু সিদ্ধান্ত হয় ওদের সদরদপ্তরে৷

আরও খবর